এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন A to Z সম্পূর্ণ গাইডলাইন?
অনলাইনে ইনকামের একটি সফল মাধ্যম রূপে affiliate marketing সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।আপনার যদি ব্লগ,ইউটুবে চ্যানেল,অথবা ফেসবুক পেজ থাকে তাহলে এই মার্কেটিং দ্বারা ভালো ইনকাম করার সুযোগ আছে।ওয়েবসাইট বা ইউটুবে নানান ভাবে আয় আসে তারমধ্যে এফলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে সেরা মাধ্যম।

এই পোস্টে affiliate marketing কি, এফিলিয়েট marketing কাকে বলে,ও কিভাবে শুরু করবো এই বিষয় গুলি আলোচনা করবো।
ফ্রেন্ডস আর্টিকেল শুরু করার আগেই একটা কথা জানিয়ে রাখি,এই মার্কেটিং থেকে আয় পেতে হলে আপনার কাছে অডিয়েন্স/দর্শক থাকা দরকার।
ব্লগে/youtube অথবা যে প্লাটফর্মে কাজ করেন সেখানে নিয়মিত অডিয়েন্স আশা চাই।আমরা নিচে এই মার্কেটিং কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ও কিভাবে শুরে করে আয় করবেন?
affiliate marketing এককথায় একটি সফল প্রোডাক্ট প্রোমোট কৌশল।এই মার্কেটিং দ্বারা পণ্যের মালিক তাদের প্রোডাক্ট গুলি অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট,ইউটউব,বা ফেইসবুক পেজে প্রোমোট করে থাকে।
সাধারণত অনলাইনে affiliate দ্বারা ডিজিটাল,ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট ও সার্ভিস গুলো প্রমোট করা হয়।
পণ্যের মালিকগণ সেইসব youtube চ্যানেল,ওয়েবসাইট বা ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম পেজ গুলিতে তাদের প্রোডাক্ট প্রোমোট করতে পছন্দ করে যেখানে সাধারণত তাদের পণ্যে নিয়ে বা সেই নিস্ এর উপর দর্শকের কাছে নিয়মিত কথা বলা হয়।
এখানে অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো(ইউটিউব,ওয়েবসাইট) তাদের অডিয়েন্সদের affiliate প্রোডাক্ট গুলো সাজেস্ট করে।
সাধারণত এফিলিয়েট লিংক দ্বারা সেই প্রোডাক্ট গুলো প্রোমোট করা হয়।এখানে যতবার দর্শক/নুতুন গ্রাহক সেই লিংক দ্বারা প্রোডাক্ট ক্রয় করবে ততবার সেই প্লাটফর্ম কমিশন পাবে।
সহজভাবে বলতে হলে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি অনলাইন বিক্রয় মাধ্যম,যেখানে কোন কোম্পানি বা ইকমার্স স্টোর প্রডাক্ট ও সার্ভিস গুলি বহু দর্শকে আছে এমন প্লাটফর্ম দ্বারা প্রমোট করে অনলাইনে বিক্রি করে থাকে।
এখানে ইউটিউব,ব্লগে বিপুল দর্শকদের কাছে অফলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে পণ্য প্রমোট করা হয়।কোনো গ্রাহক সেই পণ্যগুলি ওই লিংক থেকে ক্রয় করলে সেই প্লাটফর্মের মালিক কিছু কমিশন পাই।একেই affiliate মার্কেটিং বলা হয়।
হয়তো,আপনারা ভাবছেন youtube চ্যানেল বা ওয়েবসাইট না থাকলে আর কিভাবে এই মার্কেটিং করে আই করা যায়?
আপনারা চাইলে সোশ্যাল মিডিয়ার প্লাটফর্ম যথা ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম,শর্ট ভিডিও গুলির সাহায্যে affiliate মার্কেটিং করতে পারবেন।
হাঁ অবশ্য ইউটিউব,ওয়েবসাইট থেকে যেভাবে ওয়ার্নিংআসে ফেসবুক পেজ,ইনস্টাগ্রাম থেকে সেই ভাবে আর্নিং হয় না।
তবে এফিলিয়েট ইনকাম সবথেকে ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে বেশি হয়।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?
affiliate marketing এরজন্য কোম্পানি বা ইকমার্স স্টোর গুলো তাদের প্রোডাক্ট গুলো প্রমোট করার জন্য ব্লগ ও ইউটিউব চ্যানেলর উপর বেশি নজর দিয়ে থাকে।
এখানে বিভিন্ন ডিজিটাল/ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট,অনলাইন সার্ভিসের এফিলিয়েট লিংক(কোন একটা নির্দিষ্ট ব্যক্তির affiliate রেফার কোড) ইউটউব/ব্লগ গুলি জেনারেট করেনেই।এরপর সেই প্রোডাক্ট গুলো তারা নিজের প্লাটফর্মে(youtube/blog)প্রোমোট করে।
এখানে সেই প্লাটফর্মে যেসব দর্শকগণ সেই লিংক থেকে যতবার প্রোডাক্ট ক্রয় করবেন,তাদের এফলিয়েট কমিশন সেই youtube channel/website গুলি পাবে।
কিছু ওয়েবসাইট আছে শুধু যে প্রোডাক্টটি প্রোমোট করেছে শুধু সেটির কমিশন দিবে,আবার কিছু ওয়েবসাইট আছে শুধু লিঙ্ক থেকে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যেকোনো প্রডাক্টের ক্রয় করলেই তার কমিশন দেওয়া হয়।
এখানে,জেনে রাখা দরকার এই মার্কেটিং থেকে আয় অনেক কিছু জিনিসের উপর নির্ভর করে।
কোন ধরনের প্রোডাক্ট প্রমোট করছেন,কোন প্লাটফর্মে ও কোন দেশে সেটি প্রমোট করছেন,কতদিনের জন্য করবেন সব কিছু বিষয় ভিত্তিতে কমিশন নির্ধারিত হয়।
এটি আপনারা যে ওয়েবসাইট বা কোম্পানির আফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হবেন সেখানে বুঝতে পারবেন।নিচে এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
কোন ধরণের প্রোডাক্ট এফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয়?
উপরেই জেনেছি নানান ডিজিটাল,ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট ও সার্ভিস গুলোর এফিলিয়েট প্রমোট করা হয়।
আপনি যদি বড় ইকমার্স সাইট যথা অ্যামাজন,ফ্লিপকার্ট বা আলিবাবার আফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হন তাহলে সেখানে যত ফিজিক্যাল প্রডাক্ট আছে সব প্রমোট করা যাবে।
যথা-জামা কাপড়,ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস,কিচেন আইটেম,home appliances,কসমেটিক ইত্যাদি।
একই ভাবে digital প্রোডাক্ট যথা- web hosting, website builders, VPNs,finance, video games, cryptocurrency ইত্যাদির বিভিন্ন ওয়েবসাইট এর এফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন হয় মার্কেটিং করতে পারবেন।
আপনারা দেশীয় ও বিদেশি ছোট থেকে বড় সব সংস্থার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম বা নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে পারেন।অবশ্য এরজন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল বা ওয়েবসাইট থাকা বাধ্যতামূলক।
অনলাইনে আয়ের উপাই –
এফিলিয়েট প্রোডাক্ট কিভাবে প্রমোট করা হয়?
আমরা আগেই উপরে জেনেছি এই মার্কেটিং এর সাহায্যে পণ্য ইউটিউব অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রমোট হয়ে থাকে।
তবে,আপনার ইউটিউব চ্যানেল বা ওয়েবসাইট না থাকলে ফেসবুক পেজ,ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্ল্যাটফর্ম গুলোতে এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারবেন। হ্যাঁ অবশ্য সেখানে আয় অনেক কম হবে।
কিভাবে এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট হয় সেটি একটি উদাহরণ দ্বারা জেনে নেওয়া দরকার।
ধরুন,আপনার একটি টেকনোলজি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট আছে,যেখানে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস এর সম্পর্কে আর্টিকেল পোস্ট করেন।
Amazon সাইট থেকে কোনো একটি ডিভাইস ক্রয় করেছেন,সেটি ব্যবহার করার পর তার সম্বন্ধে একটি মতামত নিয়ে একটি রিভিউ নিজের ব্লগে পোস্ট করলেন।
আর্টিকেল লেখার পর সেই ডিভাইস কোথাই ক্রয় করতে পারবেন তার এড্রেস সেই পোস্টে দিয়ে দিলেন।এখানে যে প্রোডাক্টের এড্রেস যথা ওই লিংকটি দিবেন সেটি হবে একটি affiliate link.
এবার আপনাকে আগে থেকেই amazon এর এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত থাকতে হবে,যার ফলে অ্যামাজনের সমস্ত প্রোডাক্ট প্রমোট করার এফিলিয়েট লিংক জেনারেট করতে পারবেন।
এবার অ্যামাজন থেকে সেই প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংকটি কপি করে ব্লগ পোস্টে দিয়ে দিলেন।বাস,আপনার কাজ শেষ।
এবার ওই পোস্টটি পড়ে দর্শকদের প্রোডাক্টটি ক্রয় করার ইচ্ছা হলে আপনার দেওয়া ওই লিংকে ক্লিক করে অ্যামাজন থেকে ওই ডিভাইসটি ক্রয় করেনিবে।
যতগুলি দর্শক ওই লিঙ্ক থেকে যতবার অ্যামাজন থেকে ওই প্রোডাক্ট ক্রয় করবে ততবার আপনার কমিশন যোগ হবে।
ওই ডিভাইসের উপর যত শতাংশ কমিশন থাকবে সেটি মাসের শেষে একাউন্টে ঢুকে যাবে।
এবার আপনার ব্লগের জায়গাই ইউটিউব চ্যানেলে একই প্রসেস প্রযোজ্য।ইউটুবে ভিডিও ডেসক্রিপশন বক্সে এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয়।
এখানে ইনকাম ট্রাফিকের উপর পুরো নির্ভর করে,ইউটিউব ভিডিও অথবা ব্লগের দর্শক সংখ্যা বেশি হলে আয় তত বেশি হবে।
আশাকরি,আফিলিয়েট কিভাবে কাজ করে ও এটি কিভাবে প্রমোট করা হয় সে সম্পর্কে আপনাদের ধারণা পরিষ্কার হয়ে গেছে।
এবার তাহলে চলুন জেনেনি,এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন।
affiliateমার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো(How to start affiliate marketing)
affiliate marketing কি এবং এই মার্কেট কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। এবার হয়তো এই মার্কেটে যুক্ত হওয়ার জন্য অনেকের আগ্রহ হতে পারে,কিন্তু তার আগে একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হতে হলে কিভাবে নুতুন থেকে শুরু করবেন সেটি জানা বেশি জরুরী।
কিভাবে একজন সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারবেন তার ৫টি স্টেপ-
১) নিজের অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরী করুন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা আয় পেতে হলে একটি অনলাইন প্লাটফর্ম থাকা বাধ্যতামূলক।এরজন্য যেকোনো প্লাটফর্ম থাকলেই হবে শুধু তার মধ্যে ভালো ট্রাফিক বা দর্শক থাকা চাই।উদাহরণস্বরূপ-ইউটিউব চ্যানেল,ওয়েবসাইট,সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম,শর্ট ভিডিও চ্যানেল ইত্যাদি।
২)একটি niche বা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কাজ করুন।
প্রত্যেকটি এফিলিয়েট মার্কেটারদের একটি নির্দিষ্ট মার্কেট বা niche রয়েছে।এখানে তারা সেই বিষয় ভিত্তিক কনটেন্ট দ্বারা দর্শকদের প্রভাবিত করে থাকেন।যেকোনো একধনের কন্টেন্টের উপর কাজ করুন যেখানে শুধু সেই বিষয় ভিত্তিক দর্শক আসে।এরফলে সেখানে শুধু সেই বিষয়ভিত্তিক অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করে ভালো কমিশন কামাতে পারবেন।
৩) এফিলিয়েট প্রোগ্রাম গুলিতে যুক্ত হন।
এবার আপনাদের প্ল্যাটফর্ম রেডি হয়েগেলে,কিছু ভালো অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক বা প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হয়ে যান।ভারতে ও বিদেশে বড় বড় সংস্থা আছে যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন।আপনি তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যে প্রোডাক্ট গুলো প্রমোট করবেন তাদের লিংক সংগ্রহ করুন।এখানে বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর লিংক বিভিন্ন ভাবে দেওয়া হয় -যেমন ই-কমার্স স্টোর গুলির বিভিন্ন প্রোডাক্টের লিংক আলাদা আলাদা নিতে হয়।আবার ডোমেইন ও হোস্টিং কোম্পানির একটি লিংক নিয়ে কাজ হয়ে যায়।
৪) নিজ প্লাটফর্মে অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করুন।
অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন হওয়ার পর নানান সামগ্রীর এক বা একের অধিক লিংক নিজের প্ল্যাটফর্ম যথা ব্লগ,ইউটিউব চ্যানেল অথবা ফেসবুক পেজের মধ্যে শেয়ার করতে হবে।যখনই কোনো দর্শক সেই লিংকে ক্লিক করবে তারা সেই পণ্যের ওয়েবসাইটে পৌঁছে যাবে।এখানে তারা যখন সেই সামগ্রীটি ক্রয় করবে তার আফিলিয়েট কমিশন আপনার খাতায় জমা পড়বে।
৫) ডিমান্ড যুক্ত অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট নিয়ে কথা বলুন।
আপনার প্লাটফর্মের উপর যে বিষয় গুলির অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট সেল বেশি হয়,সেই বিষয়ের ভিত্তিক বেশি বেশি কন্টেট তৈরী করুন।এখানে আপনার ইনকাম বারার সঙ্গে সঙ্গে দর্শক ও বৃদ্ধি পাবে।
আশাকরি,অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন তার এই পাঁচটি স্টেপ বুঝতে পেরেছেন।
নিচে,amazon এর এফলিয়েট উদহারণ দিয়ে সহজ ভাবে বুঝানো হলো।
আমি ধরেনিলাম আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল অথবা ওয়েবসাইট রয়েছে,এবার আপনাদের প্রশ্ন হচ্ছে affiliate মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?
এখানে ধরে নিচ্ছি আপনার একটি টেক ইউটিউব চ্যানেল আছে যেখানে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস যথা মোবাইল,কম্পিউটার,গ্যাজেটস নিয়ে কথা বলা হয়।
এবার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন হতে টেকনোলজি ইকমার্স সাইট যেমন ভারতের সবথেকে বড় অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক অ্যামাজনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।
এছাড়া আরও অন্যান্য affiliate প্রোগ্রাম আছে,তবে এখানে amazon এর উদহারণ নিলাম।
Amazon affiliate ই-কমার্স স্টোরে যুক্ত হতে তাদের অ্যাফিলিয়েট সাইট ওপেন করুন,সেখানে নিজের পরিচয় ও প্লাটফর্ম এর বিবরণ দিন এবং তাদের প্রোগামে যুক্ত হয়ে যান।
একটি অ্যাসোসিয়েট id পাবেন যেটা শেয়ার করা প্রত্যেক পণ্যের লিংকে সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
এবার নিজের চ্যানেল যে সকল Electronics সামগী নিয়ে কথা বলবেন তাদের affiliate লিংক আমাজন থেকে জেনারেট করুন এবং ভিডিও ডিস্ক্রেপশন বক্সে দিয়ে দিন।
এখানে যেসব দর্শক ওই লিংক থেকে amazon এ প্রবেশ করে সেই পণ্যটি ক্রয় করলে তাদের অফলিয়েট কমিশন আপনার খাতাই যোগ হবে। আমজোন মাসের শেষে সেটি আপনার ব্যাংক AC তে পাঠিয়ে দিবে।
এইভাবে আপনার অ্যামাজনের মতো আরো অনন্য ই-কমার্স স্টোর বা কোম্পানি যেমন -ফ্লিপকার্ট,myntra,clickbank এদের এফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন হতে পারবেন।
এবার এই affiliate দ্বারা কত ইনকাম করা যায় তার সম্পর্কে জানবো।
অনলাইনে আয়ের নানান উপাই –
এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা কত টাকা আয় করা যাবে?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন ইন্ডাস্ট্রি যেখানে আনলিমিটেড টাকা ইনকামের সুযোগ আছে।এটা পুরোপুরি আপনার উপর নির্ভর করে এই ইন্ডাস্ট্রি থেকে কতটা আর্নিং করবেন।ভারত ও বিশ্বে বহু লোকে আছে যারা শুধু এই মার্কেটিং করে লক্ষ লক্ষ টাকা কমিয়ে নিচ্ছেন।আপনারা চাইলে ভালো রকম আয় করতে পারবেন।
এই ইন্ডাস্ট্রি আমাদের দেশে বিপুল হরে সক্রিয় হচ্ছে।মার্কিন স্ট্যাটিস্টিক রিপোর্ট থেকে জানা যায় 2022 সালের মধ্যে সেদেশে অ্যাফিলিয়েট দ্বারা খরচ হবে প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা।
এথেকে বুঝা যায় এই ইন্ডাস্ট্রি কতটা বড়।এখানে আমেরিকার উদহারণ নেওয়ার কারণ হচ্ছে আপনি যেকোনো দেশে বসে সারা বিশ্বে এফলিয়েট মাকেটিং করতে পারবেন।
এই ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো বর্ডার নেই,অবশই তার জন্য একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট চুষ করে তার ভাষা ইংলিশ বা যে দেশে প্রমোট করবেন সেটি হতে হবে।
আপনার যদি কোনো youtube চ্যানেল অথবা ব্লগ থাকে তাহলে সেখানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সব থেকে বেশি কার্যকর।
আমি ইনকাম নিয়ে কথা বলতে হলে ধরে নিলাম আপনার একটি টেক ব্লগ আছে যেখানে বিভিন্ন মোবাইলের রিভিউ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করেন।
আমরা এই ব্লগের উদহারণ নিয়ে এই মার্কেটিং থেকে আর্নিং দেখবো।
ধরেনিলাম কোন একটি এন্ড্রোইড ফোন নিয়ে একটি রিভিউ পাবলিশ করেছেন,এবার সেই পোস্টে ফোনটি ক্রয় করার লিংক আমাজনের দেওয়া আছে।
এবার সেখানে Amazon এফলিয়েট লিংক দেওয়া আছে,সেখানে কোনো দর্শক ক্লিক করে আমজোন থেকে ক্রয় করলে ২.৫% কমিশন আপনি পাবেন।
এবার সেই আর্টিকেলটি পড়তে প্রত্যেক দিন ১০ জন লোক আসে আপনার ব্লগে।সেই আর্টিকেলে রিভিউ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে যদি ১ জনও Amazon থেকে ফোনটি ক্রয় করে তাহলে ধরেনিলাম ১০০০০০ টাকার ফোন ২.৫% এফলিয়েট কমিশন ২৫০ টাকা পাবেন।
শুধু একটি আর্টিকেল থেকে ৩০দিনে ৭৫০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।এইভাবে যদি ২০টি আর্টিকেল থাকে তাহলে হিসাব করেনিন আরো কত টাকা আয় হতে পারে।
এই ছাড়া বহু টেক প্রোডাক্ট আছে,যেমন ডোমেইন ও হোস্টিং যেখানে ৫০% এফলিয়েট কমিশন দেওয়া হয় সেগুলি ব্লগে প্রোমোট করলে কিরকম আয় আসবে কল্পনা করেনিন।
এবার আমরা কিছু বিখ্যাত এফলিয়েট নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানবো যেগুলো আপনাদের জেনেরাকা দরকার।
কয়েকটি সেরা এফলিয়েট প্রোগ্রাম(Top Affiliate marketing programs)
বর্তমানে নানান ছোট,বড় কোম্পানি,ই-কমার্স সাইটের Affiliate programs দেখা যায়।আপনারা উল্টা পাল্টা সাইটের প্রোডাক্ট প্রোমোট করতে যাবেন না।কিছু ট্রাস্টেড কোম্পানির programs আছে যারা ঠিকঠাক কমিশন দেই ও তাদের প্রোডাক্ট গুলি জেনুইন,সেইসব কোম্পানির বা ই-কমার্স সাইটের Affiliate এরসঙ্গে যুক্ত হন।
আমরা নিচে কয়েকটি সেই ধরণের Affiliate programs দেখে নিবো।
- Amazon affiliate – ভারত ও বিশ্বে একটি জনপ্রিয় এফলিয়েট প্রোগ্রাম হচ্ছে amazon এর এফলিয়েট প্রোগ্রাম।এটি Amazon Associates Program নামে পরিচিত।আমজোনের প্রোডাক্ট প্রোমোট করতে হলে এই প্রোগ্রামে যুক্ত হতে হবে।এখানে জয়েন হতে একটি ওয়েবসাইট বা youtube চ্যানেল থাকা দরকার।একবার রেজিস্টার হয়েগেলে সমস্ত প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক পেয়েযাবেন। আমজোন আর একটি কারণে বিক্ষত সেটি হচ্ছে যতগুলি প্রোডাক্ট আপনার লিংক থেকে ক্রয় হয়েছে তার ঠিকঠাক commission দেওয়া হয়।
- Commission Junction– আমাজানের মতো আরকেটি জনপ্রিয় ও পুরাতন এফলিয়েট নেটওয়ার্ক হচ্ছে কমিশন জাংশন।ইন্ডাস্ট্রিতে এটি CJ নামে পরিচিত।এর সব থেকে বড় সুবিধে হচ্ছে এখানে প্রায় 1500+ merchant রয়েছে যারফলে আলাদা আলাদা ইকমার্স স্টোর গুলির এফলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন হওয়ার দরকার নেই।এখানে সব ধরণের নিস্ ভিত্তিক merchant রয়েছে।সাইন আপ প্রক্রিয়া বিভিন্ন merchant(কোম্পানি/একমার্স স্টোর) এর উপর ভিত্তি করে হয়।কোনো merchant তাড়াতাড়ি অনুমোদিত দেই অপবার কেউ কয়েকদিন পর।
- vCommission Affiliate-ভারতের অন্যতম একটি জনপ্রিয় এফলিয়েট কোম্পানি হচ্ছে vCommission,যেটি দ্রুত গতিতে গ্রও করছে। এদের নেটওয়ার্কে ভারত ও বিশ্বের বড় বড় কোম্পনি যুক্ত আছে,যেমন Amazon,Flipkart,Aliexpress,Myntra,godady,airtel ইত্যাদি।ভি -কমিশন বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল CPA (Cost Per Action) অ্যাড নেটওয়ার্ক নামে পরিচিত।এখানে জয়েন হলে বিভিন্ন কোম্পনির সঙ্গে কাজ করতে পারবেন।
- HostGator Affiliate-হোস্টগেটর হচ্ছে একটি ইনডিস্ট্রির নামকরা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি। এদের এফলিয়েট জয়েন হলে ওয়েব হোস্টিং প্রোমোট করতে হয়।এখানে এফলিয়েট কমিশনের পরিমাণ অনেক বেশি।আপনার লিংক থেকে কেউ এদের হোস্টিং ক্ৰয় করলে $125 পর্যন্ত প্রত্যেক কমিশন পেতে পারেন।
- eBay Affiliate– ebay একটি বিশ্ব বিখ্যাত ইকমার্স সাইট।সেরা এফলিয়েট কমিশন প্রদান করা কোম্পানি গুলির মধ্যে ebay হচ্ছে সর্বপ্রথম।সারা বিশ্ব জুড়ে এদের নেটওয়ার্ক অবস্তিত,এখানে ফ্রীতে খুব সহজেই জয়েন হওয়া যায়।আপনারা প্রত্যেক প্রোডাক্ট sale করে ১২% অবদি কমিশন দেওয়া হয়।
এছাড়া আরও বহু এফলিয়েট প্রোগ্রাম ও নেটওয়ার্ক আছে যেগুলো ভালো কমিশন পে করে থাকে।আপনারা যখন এই মার্কেটিং দ্বারা আয় করার সিদ্ধান্ত নিবেন,তখন গুগলের মধ্যে একটু রিসার্চ করে নিবেন।
নেক্সট এই মার্কেটিং এর সুবিধে গুলো জেনেনি।
অনলাইনে আয়ের মাধ্যম –
এফলিয়েট মার্কেটিং এর কিছু সুবিধে
বর্তমানে এফলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ইনডিস্ট্রি।পৃথিবীর ছোট বড় সব কোম্পানি অফলাইন বা অনলাইনে কোনো না কোনোভাবে এই ফিল্ডে কাজ করে।এই মার্কেটিং এর বহু সুবিধে লক্ষ করা যাই।নিচে সে গুলি উল্লেখ করা হলো।
- এই মার্কেটিং এরমধ্যে খুব সহজেই সম্পূর্ণ ফ্রীতে যুক্ত হওয়া যায়।অন্যান্য ফিল্ডে আয় করতে অনেক টাকার প্রয়োজন পরে এখানে কোন টাকার দরকার নেই। শুধু একটি প্ল্যাটফর্ম থাকা দরকার যেখানে দর্শকদের কাছে প্রোডাক্ট প্রমোট করা যাবে।
- এফলিয়েট মার্কেটিং করতে কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই,শুধু যে প্রোডাক্টের মার্কেটিং করবেন তার সম্পর্কে জানা দরকার।
- এই মার্কেটিং ফিল্ডে সব ধরণের নিস্ নিয়ে কাজ করা যায়।যেকোনো প্রোডাক্ট,অনলাইন -সার্ভিস,ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর এফলিয়েট sale করতে পারবেন।
- এই মার্কেটিং ফিল্ডকে একটি পার্টটাইম বা অতিরিক্ত ইনকামের রাস্তা হিসাবে বেঁছে নিতে পারবেন। কোনো পার্মানেন্ট জব ছাড়ার দরকার নেই।
- যে প্রোডাক্ট গুলো মার্কেটিং করবেন,সেগুলির উপর খাটার দরকার নেই।কোম্পনি সব কিছু আগে থেকে তৈরী করে রাখে। এখানে লিংক,ব্যানার,ভিডিও সবকিছু পেয়েযাবনে আপনাকে শুধু প্রোমোট করতে হবে।
- এই মার্কেটিং এর একটি বড় সুবিধে হচ্ছে ইন্টারনাল দর্শকদের কাজে প্রোডাক্ট প্রোমোট করা যায়। এছাড়া এই ইন্ডাস্ট্রিতে বড় বড় ইন্টারনাল এফিলিয়েট প্রোগ্রাম ও নেটওয়ার্ক গুলোতে কাজ করতে পারবেন।
Affiliate marketing নিয়ে কিছু জরুরি প্রশ্নের উত্তর
এফলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে বহু লোকের নানান প্রশ্ন আছে,যদিও আর্টিকেল পরে আশাকরি অনেক পরিষ্কার হয়েযাবে। তাই,যে বিষয় গুলো নিয়ে কথা বলা হয়নি সেরকম কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর নিচে দেওয়া হলো।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করা কি হালাল?
আমি নিজে একজন মুসলিম হওয়ার ফলে হালাল আয়ের বিষয়টি সব সময় খেয়াল রাখি।তাই আমার মত অনেক মুসলিম ভাই এটি হালাল না হারাম সেটি জানতে চান। এফলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে একটি বিসনেস যেটি হালাল।তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কোন অসুবিধে নেই,তবে আপনি কোন কোম্পানির,কি ধরণের প্রোডাক্ট এফিলিয়েট দ্বারা প্রোমোট করছেন সেটি হালাল নাকি সেটি যাচাই করুন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করব?
আপনার কাছে দর্শক থাকলে এই মার্কেটিং থেকে ভালো ইনকাম আস্তে পারে। সম্পূর্ণ ফ্রীতে এই ইন্ডাস্ট্রিতে সহজেই যুক্ত হওয়া যায়।এখানে কোনো অভিজ্ঞতার দরকার নেই,শুধু প্রোডাক্ট প্রোমোট করে লক্ষ লক্ষ টাকা যায় করা সম্ভব।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স কোথায় শিখবো?
এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা আয় করতে কোনো কোর্সের দরকার নেই,তবুও ইউটউব এরমধ্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে A to Z ভিডিও পেয়ে যাবেন।এছাড়া যে নিস্ এর প্রোডাক্ট এফিলিয়েট প্রমোট করতে চান,সেই সব ভিডিও, টিউটোরিয়াল,কোর্স,গাইডলাইনস সবকিছু বিনামূল্যে ইউটিউবে পেয়ে যাবেন।শুধু একটু খুঁজে বার করে নিতে হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং বাংলাদেশের মধ্যে কিভাবে করবো?
এফিলিয়েট মার্কেটিং আপনি যেকোনো দেশ থেকে করতে পারেন সেটা বাংলাদেশ হোক বা ইন্ডিয়া।অনলাইন প্লাটফর্ম যথা ওয়েবসাইট ও ইউটউব দ্বারা ইন্টারন্যাটিনাল দর্শকদের টার্গেট করার সুবিধে পাবেন।এছাড়া দেশীয় এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক গুলিতে যুক্ত হয়ে নিজ দেশে এই ফিল্ডে কাজ করতে পারেন,আয় ভালো আসে।
অনলাইনে থেকে আয় করার অন্যান টপিক.…
আমাদের শেষ কথা,
আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে affiliate মার্কেটিং কি?কিভাবে শুরু করবো,এর সুবিধে গুলো কি কি ও কত টাকা আয় করা যাবে,সব কিছু আলোচনা করলাম।
আপনারা যদি youtube,short video,website/blog থাকে অথবা এগুলিতে কাজ করার চিন্তা করছেন তাহলে এই মার্কেটিং ইনকামের একটা মধ্যম হতেপারে।
তাই আপনারা যে নিস্ নিয়ে কাজ করছেন তার উপর কোন প্রোডাক্ট দর্শকদের আকৃষ্ট করবে,কোন দেশে কেমন দর্শকদের টার্গেট করছেন সে গুলি বিবেচনা করুন। এর জন্য গুগল ও youtube এর সাহায্য নিতে পারেন।
শেষে এটাই বলবো এই এফিলিয়েট মার্কেটিং সমদ্ধে গাইডলাইন কেমন লাগলো সেটি অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।সালাম/ধন্যবাদ